৬ বছরের নিরলস প্রচেষ্টার পর বৈজ্ঞানিকেরা বাণিজ্যিক সাফল্য লাভে সক্ষম এরূপ ন্যানোজেনারেটর প্রস্তুত করতে সক্ষম হয়েছে। ন্যানোজেনারেটর – এক ধরণের নমনীয় চিপ যা দেহের নড়াচড়া- আঙ্গুলের চাঁপ এবং আশা করা যাচ্ছে ভবিষ্যতে নাড়ির গতীর মাধ্যমে বিদ্যুত তৈরী করবে।
ডঃ জং লি ওয়াং, প্রধান বৈজ্ঞানিক, জর্জিয়া ইন্সটিটিউট অভ টেকনলজির ধারণা এই আবিষ্কার ভবিষ্যত জীবনধারাতে বিশাল পরিবর্তন আনবে। তার মতে ‘ব্যাটারি ও বৈদ্যুতিক সংযোগ ব্যতীত শুধুমাত্র মানব দেহের নড়াচড়ার মাধ্যমে বিদ্যুত উৎপাদনের ফলে আমাদের নিত্য ব্যবহার্য যন্ত্রগুলোর পরিবর্তন নিয়ে আসবে। তার মতে এর ব্যবহার শুধুমাত্র কল্পনার কাছেই হার মানতে পারে।
এ মুহুর্তে এ ন্যানোজেনারেটর দ্বারা যে কোন প্রচলিত এল.সি.ডি, আলো প্রদানকারী ডায়োড অ লেজার ডায়োডে বিদ্যুত দিতে সক্ষম। ওয়াং আশা করছেন এই প্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে জুতার তলা থেকে হাটার ফলে যে বিদ্যুত তৈরি হচ্ছে তা মোবাইল বা এ ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্র চার্জ দেয়া সম্ভব। এছাড়া ইনসুলিন পাম্প শুধুমাত্র হার্ট বিটের মাধ্যমে চালানো সম্ভব বলে ধারণা করছেন।
এই ন্যানোজেনারেটরের মূল ভিত্তি হল জিঙ্ক অক্সাইডের তৈরি ন্যানোতার। জিঙ্ক অক্সাইড তার সাধারণত পিজোলেক্ট্রিক – এরা সোজা-বাকা হবার মাধ্যমে বিদ্যুত তৈরিতে সক্ষম, যে কোন ধরণের নড়াচড়া হতে পারে- হাটা, হার্ট বিট এমন কি শরীরে মধ্যে দিয়ে রক্ত চলাচলও। এই ন্যানোতার বাতাস, ঘুর্ণায়মান চাকাসহ যে কোন ধরণের নড়াচড়া থেকে বিদ্যুত তৈরিতে সক্ষম।
এই জিঙ্ক অক্সাইড ন্যানোতারের আয়তন এত ছোট যে ৫০০টি তার একজন মানুষের চুলের মাঝে স্থাপন করা সম্ভব। ওয়াং ও তার দল মিলিয়ন ন্যানোতার থেকে বিদ্যুত উৎপাদন ও তার সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। তারা এ বিদ্যুত ডাকটিকিটের সমান নমনীয় পলিমার চিপের মাঝে সংরক্ষন করে থাকেন। এ রকম পাঁচটি চিপ একত্রিত করে তারা ১মাইক্র অ্যাম্পিয়ার কারেন্ট সম্বলিত ৩ ভোল্ট সমপরিমান বিদ্যুৎ পেয়েছেন যা দুটি AA ব্যাটারীর সমান।
ওয়াং আশ্বাস দিয়েছেন যদিও এই উৎপাদন অত্যন্ত কম বলে মনে হচ্ছে তবে ভবিষ্যতে অনেকগুলি ন্যানোজেনারেটর একসাথে জোড়া লাগিয়ে বড় বৈদ্যুতিক সরঞ্জামগুলো চালানো যাবে।
আমরা দ্রুত এর উন্নয়ন ও বানিজ্যিক উৎপাদনের আশা করছি, ভাবা যায় আমরা আমাদের পকেটের মাঝে মোবাইল রেখে চার্জ করতে পারবো।
সুত্রঃ American Chemical Society
No comments:
Post a Comment